কাঠপুতুলের গল্প-৩ : কাল্পনিক কথোপকথন


জানলার কাঁচে অবিরাম জলস্রোত দেখতে দেখতে কাঠপুতুল চেনা সুবাসের অস্তিত্ব টের পায়। একটু হাসে হয়তো। মুহূর্তের মাঝেই পাশে অপর এক আবছায়া এসে দাঁড়ায়।

-মনে পড়ে, কতদিন পেরিয়ে গেছে, যখন বর্ষার দিন একটুকরো জলচিঠিতে লিখে পাঠাতাম, “বেরিও না আজ”?

-বেশ মনে পড়ে। তবে সত্যি কথাটা জানাইনি কখনও।

-আজ শুনবো, বলো। অতীতের যে বর্ষার দিনগুলোতে তোমার হৃদয়ের কথা হৃদয়েই সুপ্ত থাকতো, কালের পরিক্রমায় এই বর্ষায় সেসব মুক্ত হয়ে যাক। মেঘজলে ভেসে যাক চাপা আবেগ…

-আমি কখনই বর্ষার দিনে বেরোতে চাইনে। উদ্দাম বৃষ্টিতে তো নয়ই। ঘরবন্দি মানবীর তপ্ত হৃদয়ে হঠাৎ শীতল জলের স্পর্শ পড়লে তার ফুঁসে ওঠাই স্বাভাবিক। আর সেইসব আকাঙ্ক্ষাকে বিসর্জন দিয়েছি বহু আগেই। সম্ভবত আমার নিয়তি চার-দেয়ালের মাঝেই…

-নাহ, সেটা ভুল।

-ভুল যে নয়, সে খুব ভালো করেই জানি। আশান্বিত করা ভালো। কিন্তু যে জন্মান্ধ, তাকে আকাশের নীল রঙের ক্রমপরিবর্তন দেখানোর আশা না দেওয়াই শ্রেয় নয় কি?

-হয়তো। তবে কাঠপুতুলের ক্ষেত্রে তেমনটা হবে না।

-এতটা নিশ্চিত?

-এলামই তো কাঠপুতুলকে মুক্ত করে নিয়ে যে্তে। তোমার জল ছুঁইছুঁই নৌকো আর মেঘের কোলে ছোট্ট ঘরের স্বপ্ন পূরণ করতে…

-নাহ, সে চাওয়া নেই। সেই নৌকো আর মেঘের কোলে বাড়ি আর কারো জন্যে রেখে দিও। তোমার উপযুক্ত কাউকে…

-সময় আসুক, তারা নিজেরাই উপযুক্তটিকে খুঁজে নেবে।

-অন্তত সেটা আমি নই।

-সময় বলে দেবে।

-আর যদি সময় তোমার কিংবা আমার আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে চলে যায়?

-নিতান্ত দুর্ভাগ্য ছাড়া কী বলব তাকে? তবে উপযুক্ততার কারণে তোমার পদচিহ্নটা সেখানে ফুটে উঠবে আপনা থেকেই।

-জানিও, ফুটে উঠেছিল কি না।

-সে তুমি নিজেই দেখতে পাবে, নিজ চোখে।

-অপেক্ষায় রইলাম। তার আগেই যেন আলো না নিভে যায়।

-সময় আসুক। এখন বর্ষণের গান শোনো। অতীতের সাথে মিল খুঁজে পাও কি না জানিও।

-ভালো থেকো। আর থেকো অপেক্ষায়।

-আমি অপেক্ষায় নেই।

-আমি একাই তবে অপেক্ষায়?

-আমি তো নিশ্চিত কাঠপুতুল, তবে কেন অপেক্ষা?

-বেশ। যাচ্ছ এখনই?

-অরণ্য ডাকছে যে আমায়। সাড়া না দিয়ে উপায় নেই যে!

-বেশ, তোমার আকাঙ্ক্ষাই পূর্ণ হোক। তোমার ভালোলাগা সম্ভবত ওখানেই… আমি ঘরবন্দিই থাকি। মুক্ত অরণ্যে তোমার স্থান, আর আমার এই আঁধারের কোণে। বিদায়।

কাঠপুতুল পাশ ফিরে আর অস্তিত্বটাকে খুঁজে পায়না। তার আগেই সে উড়াল দিয়েছে অরণ্যে। বরাবরের মতই, আকাঙ্ক্ষার বিনাশ ঘটিয়ে।

নিশীথিনীর দিনলিপি-১৬


বহুদিন ধরে নিজের কথা কিছু লেখা হয় না। কেমন আছি, কিভাবে আছি, কাদের সাথে বসবাস- লিখিনা অনেকদিন। কাঠপুতুলের গল্প যদিও আমারই প্রতিচ্ছবি প্রায়, তবুও তার সাথে অনেকটা কল্পনার মিশ্রণ আছে। স্বচ্ছ জলে একফোঁটা জলরং এর মতো অনেকটা। ক্রমশ মিশে যেতে থাকে। যা হোক…

১৭তে পা দিলাম এবার। একরকম অনুভূতিহীন কাটলো জন্মদিনটা। বড় হয়ে যাচ্ছি, সেজন্যে? হয়তোবা না। বরং অন্যান্যবারের চেয়ে এবারের জন্মদিনটাই কেটেছে হয়ত একটু বেশি মুখরতায়, একটু বেশি ভালোবাসার স্পর্শ নিয়ে। বারোটার ঠিক পরপরই তিতু, নাজলাপা, মুন্না ভাইয়া, শিজু’পা, গেজুপা, আনুশার উইশের রিপ্লাই দিতে গিয়ে দ্বিধায় পড়ে যাচ্ছিলাম কারটা আগে দেবো। টেক্সটগুলো পড়তে অতটা সমস্যা হয় না, তবে সমস্যায় পড়ে যাই কথা বলতে গিয়ে। চোখে জল টলমল করতে থাকে, এই বুঝি নামলো, কণ্ঠটা কেঁপে উঠলো- ভয়ে থাকি। তবুও উত্তর দিই হাসিমুখে। কেন চোখ সিক্ত হয়ে আসে, জানি না। জানতেও চাই না। শুধু জানি, এই মানুষগুলোর ভালোবাসার একজন অংশীদার আমি- ব্যস, আর কিছু জানতেও চাই না।

তবে একটা অংশ ফাঁকাই থেকে গেল সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুটির উইশ না পেয়ে। কী প্রকট অভিমানে তাকে লিখলাম, আমি জানি, আর সর্বদ্রষ্টা বিধাতা জানেন। এই অনিচ্ছাকৃত অবহেলায় ততক্ষণে টপটপ করে বর্ষা নামতে শুরু করেছে। অথচ আগেই বলে রাখা যে বিশেষ দিনগুলো এই বন্ধুটির মনে থাকে না। তবুও, অভিমানটা সামলে রাখা গেলো না। তাহলে কিভাবে দাবি করি , বড় হয়ে গিয়েছি বলেই জন্মদিনগুলো কোনো অনুভূতি সৃষ্টি করছে না আর? আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে কখনই বড় হই না। ছোট্টটি থাকি, অভিমানী থাকি। অবহেলায় মুখ ফেরাই, অভিমানে ঠোঁট ফোলাই, ভীষণ ক্রোধে বকাঝকা করি উন্মত্তের মতো; দিনের শেষে অশ্রুসিক্ত মুখে তার কাছেই ফিরে যাই।

কেন ফিরি? ভালোবাসি বলে? নাহ, ভালোবাসা হয়ত খুব তুচ্ছ একটা অনুভূতি। অন্তত এই সেলফোন-ইন্টারনেটের যুগে ভালোবাসা সূর্যের মতো। উদয়ের কালে নরম আভা ছড়িয়ে যায়, ধীরে ধীরে প্রখরতা বাড়ে, তপ্ত করতে শুরু করে, আর দিনের শেষে সবকিছুকে আঁধারের দায়িত্বে ছেড়ে দিয়ে লুকিয়ে পড়ে। ফিরে আসি এই মানুষগুলোকে ছাড়া চলবে না বলে। এটাকে বোধহয় বলে মায়া। হ্যা, হয়ত এই মানুষগুলোর জন্যে প্রচ্ছন্ন একরকম মায়া আছে আমার মধ্যে। অনুভূতিহীন কাঠপুতুলের মধ্যে।
আজকাল বোধহয় দুঃখবিলাসিতায় মেতে উঠছি প্রায়শ। এক্সাম শেষে বেরিয়ে প্রথমেই জিজ্ঞেস করি নিজেকে, “তুমি সন্তুষ্ট?” উত্তর হ্যাঁ-সূচক হয় সবসময়েই। প্রথমে মুখটা সেজন্যে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করি, যাতে কেউ বিপরীতটা না ভাবে। বেরিয়ে দেখি কেউ নিতে আসেনি তখনও। প্রখর রোদ পড়ছে এমন একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করি। রোদ্দুরের সাথে আমার সবসময়েই ভীষণ রকম সখ্য।

দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মানুষগুলোকে দেখি। একেকটা মানুষের মুখে একেকরকম অনুভূতির পরিস্ফুটন দেখি। কারও হয়ত এক্সাম ভালো হয়নি। চোখেমুখে বিরক্তি। কেউ কোন প্রশ্ন নিয়ে দ্বিধান্বিত, চোখমুখে উৎকণ্ঠা। কেউ আনন্দে আত্মহারা, কারও হতাশায় চোখেমুখে আঁধার নেমে আসছে ক্রমশ, এই তপ্ত উজ্জ্বল দুপুরে। তীক্ষ্ণ চোখে তাদের লক্ষ করতে থাকি। অত:পর আমারও ফিরবার সময় হয়। ফিরতে ফিরতে কেমন যেন বিষাদ পেয়ে বসে। চুপচাপ থাকি। কিছু বলতে ইচ্ছে হয় না। কী লাভ অর্থহীন সব শব্দমালা উচ্চারণ করে? চুপচাপ মায়া আর ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য খুঁজি।

এই তো এভাবেই কাটছে দিন। সরল, সাধারণ, নৈঃশব্দ্যে ঘেরা। কাঠপুতুলের দিন আর কেমনই বা হতে পারে?

কাঠপুতুলের গল্প-২


রোদ্দুর আর কাঠপুতুলের গল্প

কাঠপুতুল সবসময়েই রোদ্দুরে পুড়তে ভালোবাসে। গ্রীষ্মের খরতাপে চারপাশ সোনালি বর্ণচ্ছটা আর রোদ্দুরের তাপে ঝলসে যাচ্ছে সব, তখন কাঠপুতুল ঠায় দাঁড়িয়ে ছাদের মাঝখানটায়। কখনওবা স্কুলগেটের বাইরে- ফিরবার অপেক্ষায়। কখনও ছাতাটা স্কুলব্যাগে রেখেই বিশালাকার তেঁতুল গাছটা পেরিয়ে, সারি সারি শুভ্র মূর্তিগুলোকে পেছনে রেখে দ্রুতপায়ে এগিয়ে যাচ্ছে রোদকে সাথে নিয়ে।
রোদ্দুর ছোট্ট একটা হুংকার দেয়- তুমি ভয় পাওনা আমায়? আমার তীব্র তপ্ত তীরের আঘাতকে? বুক কাঁপে না তোমার?

কাঠপুতুল হাসে- আগে পেতাম। এখন আর পাই না।

রোদ্দুর একটু চিন্তিত হয়ে থেমে দাঁড়ায়। কাঠপুতুল আরেকটু এগোয়। আকাশে হালকা মেঘের আনাগোনা। মিনিট দুয়েক পরে আবার আসে রোদ্দুর।

-কেন ভয় পাওনা?
-তুমি আমার প্রতিমুহূর্তের সখা হয়েছো বলে।

রোদ্দুর সন্তুষ্ট হয়ে তখন পাশে পাশে হেঁটে যায়। কিছুক্ষণ পরে হাঁটতে হাঁটতে গল্প শুরু হয়। ইস্কুলের গল্প, বাসার গল্প, রং পেনসিলের গল্প, ভালোলাগার গল্প, মন্দলাগার গল্প, অভিমানের গল্প। কখনও ভীষণ বিষাদে আনমনেই কাঠপুতুলের মুখটা এইটুকুনি হয়ে আসে, কাঠপুতুল বুঝতে দেয় না। রোদ্দুরের মুখটা ঝলমল করছে তখন আনন্দে। কাঠপুতুল একবার চোখ তুলে তাকায়। প্রবল ঔজ্জ্বল্যে কাঠপুতুলের চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। চোখ নামিয়ে নেয়। ভাবে,

“এমনি যেন থাকে সদা, এমনি যেন থাকে
রোদ্দুর, সখা আমার,
আমারই যেন থাকে”।

কাঠপুতুল আর মেঘলা দিনের গল্প

দিনকয়েক ধরে ঘরবন্দি কাঠপুতুল। ঘরটায় রোদ্দুরের প্রবেশাধিকার নেই। কিন্তু ভীষণরকম আকুল আজ কাঠপুতুলের মন। বহুদিনের বহু ব্যস্ততা শেষে কাঠপুতুলের আজ অবসর। জানলার কাচে চোখ পড়লো আনমনে। ফোঁটা ফোঁটা জলকণা এসে আঘাত করছে ওখানে। কাঠপুতুল একছুটে গিয়ে জানলা খুলে দেয়। জানলার বাইরে সাদা-ধূসর-কালো রঙের চাদর গায়ে জল টুপটুপ মেঘ অপেক্ষা করছে। কাঠপুতুলের দেরি দেখে খুব বিরক্তমুখে গর্জন করে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়, “সবসময়েই তুমি সময় থেকে খানিকটা পিছিয়ে কাঠপুতুল!” গর্জনে আকাশ-বাতাস কেঁপে ওঠে হঠাৎই। আচমকা রূপালি আলোর ঝলকানিতে কাঠপুতুল দুহাতে ভয়ে মুখ ঢেকে ফেলে।

“যা হোক, রোদ্দুর চিঠি পাঠিয়েছে তোমাকে। এই নাও, আমি চললাম। অনেক কাজ আমার। তোমাদের এই ধুলোর পৃথিবীর সব দায় যেন বিধাতা আমার ঘাড়ে চাপিয়েই শান্তি পেলেন!” আরেকবার আলোর ঝলকানিতে উদ্ভাসিত হয়ে যায় চারপাশ।

কাঠপুতুলের জানলায় একটা জলে ভেজা চিঠি। কাঠপুতুল দ্বিধান্বিত হয়ে ভাবে, বহুদিন দেখা হয়নি, তাই অশ্রুসিক্ত চিঠি পাঠিয়েছে বুঝি রোদ্দুর? নাকি মেঘের জলেই সিক্ত হয়েছে চিঠিটা?

Taken by Shahrina Rahmanচিঠিটা শেষ করে কাঠপুতুল চিঠির মাঝের দু’একটা শব্দ আওড়ায় বারংবার- “আমি সত্যিই তোমাকে বুঝতে পারি না কাঠপুতুল!”

কাঠপুতুলের গল্প


কাঠপুতুলের স্মৃতিশক্তি দুর্বল। সবকিছু ভুলে যায় সহজে। মানুষের ভালোবাসাগুলো মনে দাগ কাটেনা। ভুলে যায় প্রিয় বন্ধুর দেওয়া রক্তলাল পদ্ম, কিংবা কুয়াশাচ্ছন্ন লালচে গোলাপ কিংবা এক মুঠো শিউলি কোথায় রেখেছে। এক বন্ধু একমুঠো শিশির দেবে বলেছিলো বসন্তে। বসন্তটা পেরিয়ে গেল দ্রুত। সবুজ খামে শিশির আসেনি। অপেক্ষাও করেনি কাঠপুতুল। কাঠপুতুল অপেক্ষার অর্থ শেখেনি এখনও। শিখবেও না। শিখতে চায়ও না। বিস্তারিত পড়ুন

সব পথ ঘুরে


::দিহানের জন্যে শব্দমালা::

“দিহান,

আমি তোমাকে চিনতাম না। পত্রিকায় তোমার চিঠিটা পড়লাম। ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস বেরিয়ে এলো বুক চিরে। তোমার আয়নায় নিজের জীবনটাকে একবার দেখে নিলাম। অনেক ঝড়, অনেক বিষাদ আর অনেক হতাশার বোধ একসাথে ঢেউয়ের মত ধুয়ে গেল মনকে; কিন্তু কী বলব, বুঝতে পারলাম না। আগেও পারতাম না।
বিস্তারিত পড়ুন

ব্যবধানের গল্প


আমি ঠিক জানিনা আশ্রমের মেয়েটাকে এতটা অসাধারণ দেখায় কেন। রোজ সূর্যোদয়ের সময় তাকে দেখি এই বিশালাকার শতবর্ষী গাছটার নিচে এসে দোলনায় দুলতে দুলতে গুনগুন করে গান গাইতে। আমি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনি। একটু একটু সুর তুলতে চেষ্টাও করি মাঝেমধ্যে। কিন্তু বুঝি না, তার সুরের অর্থ, তার গানের কথার অন্তর্নিহিত ভাব। তার গানের সুরে মোহিত পল্লবেরা নেচে ওঠে। বাতাস এসে তাতে ঢেলে দেয় অনিঃশেষ মাধুর্য। আমি খুব বিরক্ত হই। মেয়েটার কণ্ঠের সাথে আমার আর কিছুকেই তুলনীয় লাগে না, আর কোনোকিছুকেই এতটা মধুর লাগে না। বাতাসের সুর, পল্লবের মৃদুধ্বনিকে বাহুল্য বলে বোধ হয়। আমার তরুণ চোখ দিয়ে তাকে লক্ষ করি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
বিস্তারিত পড়ুন

নিশীথিনীর দিনলিপি-১৫


বর্ষা_

অবশেষে বর্ষা এলো আপন রূপে। বহুদিন বর্ষা দেখিনি। বহুদিন। শহরে বর্ষাবরণ হয় প্রতিবারই, কিন্তু কে জানি, কি এক অভিমানে বর্ষা এই প্রিয় শহরটাকে এড়িয়ে যায় বারংবার । শহর রয়ে যায় শুকনো, খটখটে, রোদ্দুরতপ্ত। সন্ধ্যেয় চায়ের কাপ হাতে জানলার পাশে বসে,
বিস্তারিত পড়ুন

নিশীথিনীর দিনলিপি- ১৪


:: অপ্রাপ্তি ::

শৈশবে গল্প শুনতে খুব ভালো লাগত। কিন্তু গল্প শোনাবার মত কেউ ছিল না, সময় হত না কারোর। ঘুমানোর আগে গল্প শোনা যায়, এই ধারণাটা আমি পাই বই পড়ে, বন্ধুদের কাছে শুনে। শৈশবের মাঝে গিয়ে তখন এই অপ্রাপ্তিটা খুব বড় হয়ে দেখা দিয়েছিল। ভাবতাম, ঘুমানোর আগে বাবা কিংবা মায়ের কোলে শুয়ে গল্প শুনতে কেমন লাগে? জানা হয়নি কখনই।
বিস্তারিত পড়ুন

আইসিটি এবং আমাদের গ্রাম


প্রাচীন গ্রীসের নগররাষ্ট্রের ধারণা থেকে বলা যায়, শাসনক্ষেত্র যত ছোট হবে, রাষ্ট্র ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা ততটাই সহজসাধ্য হবে। বাস্তবক্ষেত্রে, আমরা বিশাল পৃথিবী কিংবা বাংলাদেশকে আকৃতিগত দিক থেকে ছোট করে আনতে পারবো না; কিন্তু পারবো পরোক্ষভাবে দূরত্বকে কমিয়ে আনতে। আর এই দূরত্বকে কমিয়ে এনে জীবনযাত্রাকে সহজ, উন্নত ও আরামপ্রদ করে তোলাই আইসিটির মুখ্য উদ্দেশ্য।
বিস্তারিত পড়ুন

ক্রীড়া নাকি সংস্কৃতি?


ফিলিপ গিলবার্ট হ্যামারটন বলেন, “Culture is like wealth; it makes us more ourselves, it enables us to express ourselves.” অর্থাৎ সংস্কৃতি সম্পদের মত। এটি আমাদের নিজস্বতা দেয়, নিজেদের উপস্থাপনের সুযোগ দেয়। সুতরাং সংস্কৃতি একটি স্বকীয়তাপূর্ণ জিনিস, এখানেই সংস্কৃতির সবচে বড় মাহাত্ম্য । সংস্কৃতি একটি জাতিকে একাই সম্পূর্ণ স্বকীয়তা দিতে সক্ষম। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত পরিচিতি লাভ করেছে মূলত তাদের সাংস্কৃতিক স্বকীয়তার মাধ্যমে। মিশরীয়দের আমরা চিনি তাদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির কারণে, গ্রিকদের আমরা চিনি তাদের স্থাপত্যকলার মাধ্যমে, ইতালীয়দের তাদের মোহময় চিত্রকলার মাধ্যমে এবং ফরাসিদের চিনি তাদের ঐতিহ্যবাহী খাদ্যরুচির ও শিল্পকলার কারণে। এখানে চিত্রশিল্প, স্থাপত্যকলা, খাদ্যরুচি, শিল্পকলা- সবকিছুই সংস্কৃতির উপাদান। এই সংস্কৃতি ফরাসি, মিশরীয়, গ্রিক, ইতালীয়সহ প্রভৃতি জাতিকে দিয়েছে অনন্য পরিচিতি।
বিস্তারিত পড়ুন